top of page

চরমপন্থী ২১শে আজ কেন নরমপন্থী ??




তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ২১শে জুলাইকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের পরিবহণ আগ্রাসন প্রতি বছরের অপরিহার্য অংশ ছিল । তৃণমূল নেতাদের ‘সিংহম’ হয়ে উঠে যাত্রীদের বাস থেকে নামার জন্য সিংহনাদ, ২১শে জুলাই এর ৭ দিন আগে থেকে বাস দখল এবং বাসে থাকা যাত্রীরা জানতেন না কখন কোন মোড়ে কোনখানে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই তাঁকে সিট ছাড়তে হবে - এই সবই ছিল তৃণমূল নেতাদের বীরবিক্রম প্রদর্শনের নমুনা বিশেষ। একটু কম আগ্রাসী নেতারা চিঠি দিয়ে বাস দখল করতেন; আর একটু বেশি আগ্রাসীরা চিঠি লেখা বা ধরানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে না গিয়ে ইচ্ছেমতন, মর্জিমতন বাসদখল করতেন নিজের এলাকায়। ২১শে জুলাই-এর সাতদিন আগে থেকেই জনবহুল স্থানে বা রাস্তার পাশে তৃণমূল পার্টি অফিসগুলি নেতারা নিজেদের দক্ষতায় চক্রব্যুহতে পরিণত করেছিলেন। বাস একবার ঢুকে গেলে ২১-এর আগে নয় কোন ছাড়। এবং ২১শে জুলাই সব বাস ধর্মতলামুখী। ৪২ শে ৪২ হলে এবার বোধহয় এই সংস্কৃতি অনুশীলিত হত ।


দুর্ভাগ্যের বিষয় ৪২ এ ৪২ না হওয়ার কারনে তৃণমূল এখন চরমপন্থী থেকে নরমপন্থী । বাসদখলের রাডিক্যাল অনুশীলন উধাও। গতকাল ২০শে জুলাই রাস্তায় বাস চলেছে জনসাধারণের জন্য। তৃণমূলের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে যা বিরলতম অভিজ্ঞতা। সিংহম নেতারা কেমন কুঁকড়ে গিয়ে যেন অক্ষয় কুমার। অক্ষয় কুমার অ্যাকশন হিরো হিসাবে কেরিয়ার শুরু করলেও পরবর্তী কালে কমেডি নায়ক হিসাবে যথেষ্ঠ জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। এখন তৃণমূল নেতারা গণতন্ত্রের কথা বলছেন, মানুষের স্বার্থে কথা বলছেন, কিন্তু ভোটে ফলাফল অর্থাৎ ৪২শে ২২ হওয়ার আগে তাঁরাই রাজ্যজুড়ে তৃণমূলীতন্ত্র এবং নিজেদের স্বার্থ দেখেছেন। কেবলমাত্র ক্ষমতা জাহির করার উদ্দেশ্যে বাস আটকে রেখেছেন দিনের পর দিন মানুষকে চরম যন্ত্রণায় ও সমস্যায় ফেলে। এবারের সমাবেশ প্রমাণ করছে যে এর আগেও সুষ্ঠভাবেই সমস্ত সমাবেশ করা যেত মানুষকে হয়রানীর মধ্যে না ফেলে। যে নেতারা সবসময় নির্দেশাত্মক বাক্যে কথা বলতেন, তাঁরা এখন গাইছেন ‘চাইছি তোমার বন্ধুতা’।


কবীর সুমনের একটি গানের লাইন আছে – ‘ ক্ষমতা তো দম দেওয়া যন্ত্র’। হায় তৃণমূল নেতারা আগে যদি বুঝতেন। সব বাস ধর্মতলামুখী করার বেপরোয়া চেষ্টা না করলে আজকে হয়তো অনেক মানুষ বাস না পেলেও ধর্মতলামুখী হত। ওল্ড ইংলিশ প্রোভার্ব একটু সম্পাদিত –Think Before Act, Never Think After Act ।।

40 views0 comments

Comments


bottom of page