পুরুলিয়া জেলার বড় মামড়ো গ্রামের মেয়ে মনিকা মাহাতো বান্দোয়ানের ডক্টর এন ঝা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বান্দোয়ানে তার জেঠুর বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত সে। গত ৩রা মে, ২০১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল মনিকা। টিউশন থেকে বেরিয়ে বড় মামড়ো গ্রামে নিজের বাড়ীতে যেতে গিয়ে আর বাড়ী ফেরেনি সে। নিখোঁজ হওয়ার পর গত ১০ই মে, ২০১৯ তারিখে জমিরটিলার জঙ্গলের কাছে মাটি চাপা অবস্থায় পাওয়া যায় মনিকার ক্ষতবিক্ষত ও বিবস্ত্র দেহ।
তদন্তে জানা যায় যে মনিকার পরনের ওড়নাই গলায় পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। আরো জানা যায় যে মনিকার দেহতে ছিল কামড়ের দাগ। ভারী কিছু দিয়ে তার শরীরে হাড়গুলি পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। খুনের আগে তার উপরে চলেছে অকথ্য অত্যাচার। তাকে পোড়ানোরও চেষ্টা করা হয়েছে।
তারপর এতদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দোষীদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যদিও মনিকার দুইজন সহপাঠীকে সন্দেহের বশে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, তবুও মনিকার পরিবারের দাবী মনিকা মাহাতো হত্যার সঠিক তদন্ত এবং সকল দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ন্যায় বিচার করতে হবে।
এই দাবীতে গতকাল ৯ই জুন, ২০১৯ তারিখে রবিবার বিকেলবেলায় কলকাতায় আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ এবং জঙ্গল মহল উদ্যোগের ডাকে একটি প্রতিবাদী মোমবাতি মিছিল সংঘটিত হয়। এই মিছিলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ভারত জাকাত মাঝি পরগণা মহল (BJMPM), KMM, আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চ (ASM), ভারত দিশম মাঝি মারোয়া (BDMM) এবং Adibasi Social Education & Cultural Association (ASECA)। Young Bengal, জঙ্গলমহল সংঘর্ষ মোর্চা, আমরা আক্রান্ত সহ অন্যান্য গণসংগঠন এবং শহর কলকাতার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষেরা যোগদান করেন। মিছিল শুরু হয় রানুছায়া মঞ্চ (রবীন্দ্র সদনের পাশে) থেকে। এই মিছিল থেকে মনিকা মাহাতো হত্যার সঠিক তদন্ত এবং সকল দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ন্যায় বিচারের দাবী করা হয়। ন্যায়বিচার না পেলে আগামীদিনে আরো বড় লড়াই হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সম্পাদক অশোক মাহাতা।
Comments